নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদকে সামনে রেখে রমজান মাসের শুরু থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জামদানি পল্লীর তাঁতীরা। ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দিন রাত জামদানি বুননে ব্যস্ত কারিগররাও। এবারের ঈদ মৌসুমে পাঁচ কোটি টাকার বেচাবিক্রির প্রত্যাশা করছেন পাইকারী বিক্রেতারা। সরকারের সহযোগিতা পেলে দেশের জামদানির প্রসার আরো বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক।
রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকায় তিন শতাধিক তাঁতখানা নিয়ে গড়ে ওঠা জামদানি পল্লীতে পুরোদমে চলছে ঈদের আমেজ। প্রতিটি তাঁতখানায় সকাল ছয়টা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত জামদানি বুননে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীসহ প্রায় ২ হাজার জামদানি তাঁতী। নারী-পুরুষদের পাশাপাশি ক্ষুদে তাঁতীরাও সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নানা রঙের নিত্য নতুন ডিজাইনের জামদানি শাড়ী বুনছেন তারা। তিন হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকা মূল্যের শাড়িও তৈরী হচ্ছে এই পল্লীতে। তবে পরিশ্রম অনুযায়ী উপযুক্ত মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ জামদানি কারিগরদের।
এদিকে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বাহারি রঙের জমকালো ডিজাইনের জামদানি কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন পাইকারী বিক্রেতারা। সপ্তাহে একদিন হাটও বসছে। এবারের ঈদ মৌসুমে কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকার বেচাকেনার প্রত্যাশা করছেন তারা।
তবে দেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারনে ভারতীয় নিম্নমানের শাড়ীর প্রভাবে আমাদের দেশীয় জামদানি মূল্য কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁত কারখানা মালিকদের। কঠোর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এই অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি ব্যাংক লোনের ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া জানান, জামদানি শিল্পটি জি.আই প্রোডাক্ট (জেলার ঐতিহ্য) হিসেবে এরই মধ্যে সরকারের কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা দেশের জন্য গৌরবের বিষয়। এই জামদানি শিল্পকে আরো বেগবান করতে তাঁতীদেরকে সরকারিভাবে স্বল্প ঋণে ব্যাংক লোনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জামদানি পল্লীতে প্রতি শুক্রবার ভোর পাঁচটা সকাল সাতটা পর্যন্ত জামদানি কাপড়ের পাইকারি হাট বসে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা এসে জামদানি সংগ্রহ করে থাকেন।